সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪১ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম:
সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুরে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভিজিডি কার্ডধারী উপকারভোগী মহিলাদের সঞ্চয়কৃত সোয়া ৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার উপকারভোগী মহিলাদের পক্ষ থেকে আত্বসাৎকৃত অর্থ উদ্ধার ও আইনি প্রতিকার দাবি করে জেলা প্রশাসক, উপ-পরিচালক মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর সুনামগঞ্জসহ সংশ্লিষ্টদের নিকট লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যানের নাম মো. হযরত আলী ওরফে কালা চাঁন।
তিনি উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও চিনাকান্দি গ্রামের মৃত ইউনুছ আলীর ছেলে। অভিযোগকারী ভিডিজি উপকারভোগী মহিলার নাম আয়েশা খাতুন। তিনি একই উপজেলার একই ইউনিয়নের কাইতাকোনা গ্রামের সুবিধাবঞ্চিত দু:স্থ পরিবারের বাচ্চু মিয়ার স্ত্রী।
লিখিত অভিযোগে উল্ল্রেখ করা হয়, উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের ৫৭৩ জন ভিজিডি কার্ডধারী উপকারভোগী মহিলাদের অনুকুলের সরকারি সহায়তার প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে ভিজিডির চাল প্রাপ্তির জন্য ১০ টাকা ফি দিয়ে ব্যাংক এশিয়া লি. বিশ্বম্ভরপুর শাখার প্রত্যক মহিলা পৃথক পৃথক হিসাব খোলার নিয়ম বেঁধে দেয়া হয়।
পরবর্তীতে ওই সব উপকারভোগী মহিলাদের প্রত্যেকের ব্যাংক হিসাবের অনুকুলে প্রতিমাসে ২৭৫ টাকা করে সঞ্চয় জমা দেয়ার পরই কেবল কার্ডধারী মহিলাদের প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে সরকারি সহায়তার ভিজিডির চাল বিতরন করা হয়।
কিন্তু ২৭৫ টাকার স্থলে অতিরিক্ত আরো ২৫ টাকাসহ প্রত্যেক মহিলার নিকট থেকে জুলাই, আগষ্ট, সেপ্টেম্বর ২০১৯ টানা এ তিন মাস (৩০০+৩০০+৩০০) ৯০০ টাকা করে সংশ্লিস্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে জমা নেয়ার পরও কোন টাকাই ব্যাংক এশিয়া লি. বিশ্বম্ভরপুর শাখায় ইউপি চেয়ারম্যান জমা করেন নি।
এতে ৫৭৩ জন উপকারভোগী মহিলার নিকট থেকে অতিরিক্ত নেয়া ৪২ হাজার ৯৭৫ টাকা ও সঞ্চয়ের ৪ লাখ ৭২ হাজার ৭২৫ টাকাসহ মোট ৫ লাখ ১৫ হাজার ৭শ শত টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেন ভিজিডি উপকারভোগী দু:স্থ মহিলারা।
সোমবার এ বিষয়ে জানতে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মো.জাহাঙ্গীর হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, খোঁজ নিয়ে জেনেছি বিগত তিন মাস ভিজিডি উপকারভোগী দু:স্থ মহিলাদের সঞ্চয়ের কোন টাকাই ওই ইউপি চেয়ারম্যান নির্ধারিত ব্যাংকে জমা দেননি।
সোমবার সন্ধাীয় বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান হযরত আলী ওরফে কালা চাঁনের নিকট তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মহিলাদের নিকট হতে সব টাকা আদায়ের পর সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যদের নিকটই টাকা জমা রাখা আছে। ৫৭৩ জন মহিলাদের মধ্যে সব মহিলার একাউন্ট খোলার কাজ শেষ না হওয়ায় টাকা নির্ধারিত ব্যাংকে জমা দেয়া যায়নি।
ভিজিডি উপকারভোগী মহিলাদের সঞ্চয়ের টাকা আত্বসাতের অভিযোগ সঠিক নয় বলেও দাবি করেন ওই ইউপি চেয়ারম্যান।
উপ-পরিচালক মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর সুনামগঞ্জ মো. জাকির হোসেন অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে বললেন, তদন্তের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়ছে, তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিকট প্রতিবেদন প্রেরণ করা হবে। তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে আরো বলেন, জেলার ধনপুর ব্যতিত সবক’টি ইউনিয়নের ভিজিডি উপকারভোগী মহিলার টাকা নির্ধারিত সময়ে ব্যাংকে হিসাবে জমা হয়ে গেছে। কিন্তু কেন ধনপুর ইউপি চেয়ারম্যান ভিজিডি উপকারভোগী মহিলাদের কয়েক লাখ টাকা নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলে ব্যাংকে জমা করেন নি, তা আমার বোধগম্য নয়।